গর্ভাবস্থায় কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা।

গর্ভাবস্থায় ফল, শাক সবজি এবং অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া খুবই প্রয়োজন। কারণ এই সময়ে সুষম খাদ্য গ্রহণ একটি সুস্থ্য সবল বাচ্চার জন্ম দিতে পারে। আজ আমরা জানব গর্ভাবস্থায় কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এবং এটা কতটা নিরাপদ।

প্রথমেই বলতে চাই গর্ভবতী মহিলারা নিরাপদে কাঁঠাল খেতে পারেন। কাঁঠালের রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। এক কাপ কাঁঠালের প্রায় ১৫৫ ক্যালোরি রয়েছে। এছাড়া কাঁঠাল ফোলেট, থায়ামিন, নিয়াসিন, রাইবোফ্লাভিন এমনকি ভিটামিন “সি” এবং ভিটামিন “এ” এর একটি ভাল উৎস।

কাঁঠালে ম্যাঙ্গানিজ, কপার, পটাসিয়াম, আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের মতো বেশ কয়েকটি খনিজ রয়েছে। কাঁঠালের উপস্থিত ফাইবার হজমকে উদ্দীপিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

নিচে গর্ভাবস্থায় কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো –

গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভধারণকৃত শিশুর জন্য ভালো:

চিকিৎসা শাস্ত্র মতে, প্রতিদিন ২০০ গ্রাম পাঁকা কাঁঠাল খেলে গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভধারণকৃত শিশুর প্রায় সব ধরনের পুষ্টির অভাব দূর হয়। গর্ভবতী মহিলারা নিয়মিত প্রতিদিন নিদিষ্ট পরিমাণে কাঁঠাল খেলে তার স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকে এবং গর্ভস্থসন্তানের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়। দুগ্ধদানকারী মা যদি পাঁকা কাঁঠাল খায় তাহলে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশে সহায়তা করে:

কাঁঠাল ক্যালসিয়াম, জিংক, আয়রন, বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ যা শিশুর বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে। এটি বিভিন্ন ভিটামিন যেমন ভিটামিন “এ” এবং “সি”, এবং ফোলেট, আয়রনের সমৃদ্ধ উৎস যা শিশুর প্রয়োজনীয় অঙ্গ গঠনে সহায়তা করে।

উচ্চ রক্তচাপ কমায়:

পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস কাঁঠাল। ১০০ গ্রাম কাঁঠালে পটাশিয়ামের পরিমাণ ৩০৩ মিলিগ্রাম। যা গর্ভবতী মহিলার শরীরে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া কাঁঠালে থাকা বিপুল পরিমাণে খনিজ উপাদান ম্যাঙ্গানিজ যা রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

শক্তির উৎস কাঁঠাল:

কাঁঠালের ৪-৫ রোঁয়া থেকে ১০০ কিলো ক্যালরি খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া শর্করা, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ রয়েছে, যা আমাদের শরীরে দ্রুত শক্তি বাড়ায়। একই সঙ্গে কাঁঠালে কোন কোলেস্টেরোল জাতীয় উপাদান নেই। কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ নিতান্ত কম, ফলে ওজন বৃদ্ধির আশংকা কম। তাই এটি গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারী।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে:

কোষ্ঠকাঠিন্য গর্ভাবস্থায় সাধারণ সমস্যা। যদি কোষ্ঠকাঠিন্য বা হজমের সমস্যাও অনুভব করেন তবে আপনি কাঁঠাল খেতে পারেন। কাঁঠালে থাকা ফাইবার অন্ত্রের গতি বিধি ঠিক রেখে কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করতে সহায়তা করে।

রক্তস্বল্পতা দূর করে:

কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন “এ”, “সি”,”ই”, “কে”, ফলেট, এবং ভিটামিন বি-৬। এছাড়াও আছে বিভিন্ন ধরণের মিনারেল সমৃদ্ধ উপাদান যেমনঃ কপার, ম্যাংগানিজ, ম্যাগনেসিয়াম যা রক্ত তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই এটি রক্তস্বল্পতা রোধে দারুণ কাজ করে থাকে।

সতর্কতাঃ

সবকিছু পরিমাণমতো খাবেন। অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। আপনার শরীরের অবস্থা বুঝে খাবেন। আপনি যদি কোনো জটিল রোগে আক্রান্ত হন বা নিয়মিত কোনো মেডিকেল কোর্স-এর ভেতর দিয়ে যান তাহলে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।