খুসখুসে কাশি ও সর্দি হলে কি করবেন?

খুসখুসে কাশি হলে কি করবেন?

ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে আমরা অনেকেই খুসখুসে কাশি এবং সর্দিতে আক্রান্ত হই। মৌসুমের এই পরিবর্তনের ফলে কারো খুসখুসে কাশি লেগে আছে আবার কারো সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং সেই সাথে জ্বর-জ্বর অনুভূত হচ্ছে।

কিভাবে খুসখুসে বা শুকনা কাশি দূর করা যায় তার কয়েকটি উপায় দেয়া হলো:

ঠান্ডা বাতাস থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন এবং AC এর বাতাসও এড়িয়ে চলুন।
শীতকালে মৃদু গরম পানিতে স্নান করার পাশাপাশি তিনবেলা ১ গ্লাস করে মৃদু গরম পানি পান করতে হবে।
যারা ধূমপান করেন তারা ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।
হালকা গরম পানির সাথে মধু মিশিয়ে খেতে হবে, সেইসাথে আদা মিশিয়ে খেলে আরো ভালো হয়।
তুলসী চা খেতে হবে, তুলসী + খুবই উপকারী খুসখুসে কাশির জন্য।
হালকা গরম দুধের সাথে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।এটি গোল্ডেন মিল্ক হিসাবে পরিচিত।
আমলকি মুখে নিয়ে চিবিয়ে রস খান, উপকার পাবেন।
নিয়মিত রসুন খান। সকালের খাবারের সাথে এক কোয়া কাঁচা রসুন সর্দিকাশি প্রতিরোধে ভালো কাজ দেয়। সর্ষের তেলের সাথে রসুন মিশিয়ে গরম করে অর্থাৎ রসুনতেল গলায় ও বুকে মালিশ করুন। লেবুররস রসুনের ঝাঁঝালো গন্ধ দূর করতে পারে। কাঁচা রসুন খেতে সমস্যা হলে রসুন ব্লেন্ড করে চা চামচের ১ চামচ রসুনের পেস্টের সাথে লেবুররস ও মধু মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে খেতে পারেন।
খাবারের সাথে কিংবা সালাদে কাঁচা পেঁয়াজ খান, কাঁচা পেঁয়াজ সর্দি-কাঁশিতে উপাদেয় ফল দেয়।

এখানে বলে রাখা ভালো যে, আবহাওয়া পরিবর্তনের পাশাপাশি এলার্জির সাইডইফেক্ট স্বরূপ, ঠান্ডাজনিত সমস্যা, জেনেটিক্যাল সমস্যা বা ইনফেকশনজনিত সমস্যার কারণেও এই সমস্যা হতে পারে।

হাজার বছর ধরে বয়োজ্যেষ্টরা সর্দি-কাশিতে যে ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করে এসেছে বা আমাদের খাইয়েছে সেটা খুবই কার্যকারী একটি পদ্ধতি। আমাদের সকলের রান্নাঘরেই গরমমসলা, তেজপাতা, মিশ্রী কমবেশি থাকে। তুলসীপাতা এবং বাসকপাতা সংগ্রহ করে খুব সহজেই গরম পানিতে ফুঁটিয়ে ঘন করে খেতে পারি। 

নিচে খুবই কার্যকরী একটি পদ্ধতির উপকরণ দেয়া হলো:

উপকরণ:

পদ্ধতি:

উপরোক্ত উপকরণ গুলি ৪ গ্লাস গরম জলের সাথে মিশিয়ে আগুনে ফুঁটিয়ে ২ গ্লাস বানিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার খেতে হবে। ৫ বছরের উপরের বাচ্চারা হামেশাই খেয়ে থাকে তবে ঝাঁল না খেতে চাইলে গোলমরিচ বাদ দেয়া যেতে পারে।

সর্দিতে কি করবেন?

আবহমান বাংলায় প্রতি দুই মাস অন্তর ঋতুর পরিবর্তন ঘটে থাকে। বারো (১২) মাসে ছয় (৬) ঋতু নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে অনন্য। শীতের বাতাস বইতে শুরু করতেই ঠাণ্ডাজনিত অস্বস্তির পাশাপাশি কারো কারো ঘন ঘন নাক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সর্দিতে। সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে গেলে খাবারের স্বাদটাও উধাও হয়ে যায়।

সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে আছে, ২-৩টা গোলমরিচ মুখে নিয়ে চিবোন, উপকার পাবেন।

এছাড়া আমলকী চিবালেও একই রকম ফল পাওয়া যায়।
বর্তমান গবেষণায় দেখা গেছে যে, শরীরে ভিটামিন এবং মিনারেলের অভাবের কারণে মানুষ বিশেষতঃ শিশুরা সর্দি, কাশিতে সহজেই আক্ৰান্ত হচ্ছে।

রাতে ঘুমাতে যাবেন কোনো কিছু ইচ্ছা করছে না বা কিছুক্ষণ ঘুমানোর পরে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর কাশি হলে গলার কণ্ঠ বরাবর উপরনিচে আঙ্গুল দিয়ে অল্প চাপ দিয়ে ঘোষতে থাকুন। উপকার পাবেন।

অতিরিক্ত চিনি এবং অতিরিক্ত লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। মিষ্টিজাতীয় খাবার বেশি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

আর একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে। সেটা হলো পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমাদের পর্যাপ্ত ব্যায়াম করতে হবে। যোগব্যায়াম অর্থাৎ নিঃশ্বাসের ব্যায়াম (অনুলম-বিলম, ভস্ত্রিকা, কাপালভাতি)- নাক দিয়ে পানি পড়া, বন্ধ নাক খোলা ইত্যাদিতে খুবই কার্যকর।

নিম্নলিখিত খাবারগুলো সকলেরই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে:

  • কলা
  • আদাচা + মধু
  • চিকেন স্যুপ
  • গাজর (গাজরের স্যুপ)
  • ডিমের সাদা আঁশ
  • লেবু + মধু