কোন আঙুলে কেমন আংটি পরবেন? আংটি পরার ইতিহাস বা কি ভেবে মানুষ আংটি পরে থাকেন?
আপনি হয়তো বলবেন আঙুলের শোভা বাড়ায়। কেউ বলবে উপকারের আশায় কারণ জ্যোতিষিরা বহুকাল থেকে ভাগ্য পরিবর্তনে হাতে বিভিন্ন পাথরের আংটি ব্যবহারের কথা বলে আসছে।
তাদের মতে, বিভিন্ন আঙুলে আংটি ব্যবহারে বিভিন্ন ভাগ্য নির্ধারণ করে। তবে আধুনিক যুগে তা বিশ্বাস না করলেও ফ্যাশন হিসেবে সব আঙুলেই আংটি পরতে দেখা যায়।
সেই আদিকাল থেকে শুধু অনামিকাতেই আংটি পরা হতো। আজকাল সব আঙুলে, এমনকি বৃদ্ধাঙ্গুলেও আংটি পরার রীতি চালু হয়েছে।
স্বর্ণ, রুপার কিংবা ইমিটেশনের যে ধরনেরই হোক আপনাকে রুচিশীল হিসেবে উপস্থাপন করতে আংটির বিকল্প নেই। অফিস, ভার্সিটি কিংবা পার্টি সব জায়গাতেই আংটির কদর সমান। তবে কোন আঙুলে কেমন আংটি পরতে হবে তা অনেকেরই অজানা।
এই আংটি যেমন আপনার বাহ্যিক সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলে তেমনই আপনার ব্যক্তিত্বকেও মেলে ধরে। তাই আঙুলের মাপ এবং আঙুলের ধরনের উপর নির্ভর করে আংটি কিনুন।
অনামিকা আঙুল বা সূর্য আঙুল(Ring finger) হাতের আঙুলের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ে কিংবা এনগেজমেন্টে বা যেকোনো উপহারে এই আঙুলে আংটি পরানো হয়। বাঁ হাতের এই আঙুলে বাগদানের আংটি পরানো হয়।
তবে দেশভেদে হাতের দিকে পরিবর্তন আছে। কোথাও কোথাও বাঁ হাতের পরিবর্তে ডান হাতে আংটি পরানো হয়ে থাকে। বিয়ের আংটি অবশ্য বাঁ হাতেই পরানো হয় কারণ এটি একেবারে হৃদয়ের সঙ্গে সংযুক্ত।
মধ্যমা আঙুলের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের আংটিতেই দেখতে ভালো লাগে। যারা প্রথম প্রথম আংটি পরছেন তারা এই আঙুলে আংটি পরে থাকেন। এতে ব্যক্তিত্বের যেমন প্রকাশ পায় তেমনি ছেলেদের ক্ষেত্রে ম্যানলি একটা লুক নিয়ে আসে।
তর্জনি আঙুল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফাঁকা থাকে। তবে আংটিপ্রেমীদের কাছে এই আঙুলে আংটি পরা ব্যক্তিত্ব প্রকাশের একটি বিষয়। বর্তমানে এই আঙুলে অনেকেই আংটি পরতে পছন্দ করে।
সাধারণত যারা তাদের প্রাচুর্য এবং নিজেদের আর্থিক অবস্থার কথা জানাতে চান তারা তাদের বুড়ো আঙুলে স্বর্ণের কিংবা রুপার আংটি পরে থাকেন। কিছুক্ষেত্রে একই বুড়ো আঙুলে দুটি আংটি পরতেও ভালোবাসেন অনেকে।
দেখা যাক কোন আঙুলে আংটি পরলে কি ইঙ্গিত প্রকাশ করে:
পুরুষদের ফ্যাশনের সঙ্গে আংটি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। কখনও সেটা সম্পত্তির আড়ম্বর, কখনও বা সেটা একটি মেসেজ বহন করে। কোন আঙুলে পরা আংটি কোন স্টেটমেন্ট বহন করে তা একনজর হলে দেখে নিন।
তর্জনী আঙুল:
বুড়ো আঙুলের পরেই যে আঙুলটি সব থেকে বেশি ব্যবহৃত হয়, সেটা হল তর্জনী আঙুল। গবেষণায় দেখা গেছে, এই আঙুলটি বেশিরভাগ ফাঁকা রাখতে পছন্দ করেন। তবে এটা সাম্প্রতিক ধারণা। কয়েক শো বছর আগে পর্যন্ত এ আঙুলেই আংটি পরতে বেশি পছন্দ করতেন। এই আঙুল ফ্যামিলি রিং, ফ্রেটারনাল রিং প্রভৃতি পরার জন্য আদর্শ।
মধ্যমা আঙুল:
এপাশে দুই ও পাশে দুই, আর তার মাঝের আঙ্গুলটি মধ্যমা আঙ্গুল। অনামিকা, তর্জনী- এই নাম দুটো মাঝে মাঝে মনে না থাকলেও হাতের সব থেক বড় ও মোটা আঙুল তথা মধ্যমা আঙুল কারো ভূল হয় না।
মনস্ততত্ত্ববিদরা বলেন, যারা প্রথমবার আংটি পরেন, তারা মধ্যমাকেই প্রথমে বেছে নেন। কারণ একটাই, এটা দেখতে `ম্যানলি` লাগে। তবে যে কোন ভারি কাজের সময় একটু অসুবিধা হতে পারে, তাই ছোট আংটি পরাই ভালো।
অনামিকা আঙুল:
সাধারণত ডান বা বাম হাতের অনামিকায় বিয়ে বা বাগদানের সময় আংটি পরা হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে এই রীতি চলে আসছে। মনে করা হয়, বাগদানের আংটি পরা হয় ডান হাতে।
বিয়ের আংটি পরা হয় বাঁ হাতে। আরও একটি ব্যাপার এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে, এই আঙুলের সঙ্গে নাকি হৃদয়ের সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই অনামিকা আঙুলে আংটি পরা হয়।
কনিষ্ঠা আঙুল:
কড়ে আঙুলে আংটি পরা নিয়ে বিশেষ কোনো রীতি কিংবা নিয়ম জড়িত নেই। তাই এই আঙুলে হালকা কাজ করা কিংবা শুধু চক্রাকৃতির আংটি পরতে পারেন। কড়ে আঙুলে ভারী আংটি না পরাই ভালো।
আমি অনেক ভারতীয় নারী পুরুষকে আংটি পরতে দেখেছি এবং এর তাৎপর্য কী তা জানতে খুবই উৎসুক ছিলাম। আমি কোথাও পড়েছি যে, কিছু আধ্যাত্মিক নির্দেশনা বা ভাগ্য পরিবর্তনের বিশ্বাসে মানুষ এগুলো পরিধান করে থাকে।