কোনটা বেশি স্বাস্থ্যকর মাখন না ঘি?
ঘি মাখন দুটোই গরুর দুধ থেকে তৈরি হয়। দুটোই যেহেতু গরুর দুধ থেকে তৈরি সেহেতু স্বাস্থ্য উপকারিতাও এক হবে। তবে মাখন ও ঘি তৈরি করার ভেদে উপকারিতা ভিন্ন হতে পারে। তাহলে এখন প্রশ্ন উঠতে পারে কোনটা বেশি স্বাস্থ্যকর ঘি নাকি মাখন।
ঘি দীর্ঘকাল ধরে ভারতীয় খাবারে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। আয়ুর্বেদ এটিকে অত্যন্ত মূল্যবান এবং আয়ু বৃদ্ধির খাবার হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
ঘি তে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ বেশি হলেও তা কিন্তু হার্টের পক্ষে ক্ষতিকর নয়, কারণ ঘি তে উপস্থিত ফ্যাট রক্তে উপকারী HDL কোলেস্টেরল এর পরিমাণ বাড়ায় এবং ক্ষতিকর LDL এর পরিমাণ কমায়। অর্থাৎ ঘি স্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরোল বজায় রাখতে সাহায্য করে। কারণ এতে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড।
কিছু লোক মাখনের বিকল্প হিসাবে ঘি ব্যবহার করেন এবং মনে করেন ঘি একটু বেশি উপকারী।
ঘি কিভাবে তৈরি হয়?
একটু একটু জমিয়ে রাখা দুধের সর জমিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। তারপর মিহি করে বেটে নিন সর। বাটা সর পরিষ্কার পানিতে অল্প অল্প করে ছেড়ে দিন। দেখবেন পানির উপরে কিছু সর ভেসে উঠেছে। খুব সাবধানে আস্তে আস্তে পানি থেকে সর আলাদা করুন। পানিতে যে সরটা ভাসে সেটা আসলে মাখন। আবার এই মাখন একটি পরিষ্কার কড়াইতে করে মৃদু আঁচে নাড়তে থাকুন। দেখবেন আস্তে আস্তে ঘি তৈরি হয়ে গেছে।
ঘি এবং মাখন এর পুষ্টিগুণ
ঘি | মাখন | |
---|---|---|
ক্যালোরি | ১১২ | ১০০ |
ফ্যাট | ১৩ গ্রাম | ১১ গ্রাম |
স্যাচুরেটেড ফ্যাট | ৮ গ্রাম | ৭ গ্রাম |
মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট | ৪ গ্রাম | ৩ গ্রাম |
পলিয়ুনস্যাচুরেটেড ফ্যাট | ০.৫ গ্রাম | ০.৫ গ্রাম |
ভিটামিন এ | ১২% (DV) | ১১% (DV) |
ভিটামিন ই | ২% (DV) | ২% (DV) |
ভিটামিন কে | ১% (DV) | ১% (DV) |
কোনটা বেশি স্বাস্থ্যকর মাখন না ঘি?
ঘিতে মাখনের চেয়ে চর্বি বা ফ্যাট বেশি থাকে। কিছু অধ্যয়ন পরামর্শ দেয় যে এই ফ্যাটগুলি প্রদাহ হ্রাস করতে পারে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। উপরের চার্ট দেখে বুঝা গেল মাখন ও ঘি এর পুষ্টির সামান্য পার্থ্যক রয়েছে।
ঘি, দুধে থাকা ল্যাকটোজ এবং দুধের প্রোটিন কেসিন থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত, তবে মাখনে স্বল্প পরিমাণে থাকে। দুধের এই উপাদানগুলি থেকে যাদের এলার্জি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ঘি ভালো। মাখনে দুধের প্রোটিন (কেসিন) উপস্থিত থাকে যা, অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।
তুলনা করলে দেখা যায়, মাখনের থেকে সামান্য বেশি হলেও ঘিয়ের উপকারিতা বেশি। ঘি বেশি স্বাস্থ্যকর।
ঘি বা মাখন অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই ঘি বা মাখন প্রতিদিন এক বা দুই চামচ এর বেশি খাওয়া ঠিক না।