কোঁকড়ানো চুল সোজা করার প্রাকৃতিক উপায়।
নারীদের সৌন্দর্যের সব থেকে বেশি নজরকারা জিনিসটি হলো চুল। অধিকাংশ মেয়েদের মাথায় কোঁকড়ানো চুল দেখা যায়। অনেকে কোঁকড়ানো চুল পছন্দ করে না। এজন্য কোঁকড়া চুল সোজা করতে কত কি নাই করে, অনেক নামীদামী প্রসাধনীও ব্যবহার করে। এতে চুলেরও ক্ষতি হয়।
নামীদামী প্রসাধনী ছাড়াও কিন্তু প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করেও কোঁকড়ানো চুল থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যদিও এই পদ্ধতিটি অনেক ধীরে কাজ করে, তবে চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এর ব্যতিক্রম নেই।
কোঁকড়ানো চুল সোজা করার প্রাকৃতিক উপাদান
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, প্রাকৃতিক উপায়ে কিভাবে কোঁকড়ানো চুল সোজা করবেন-
ক্যাস্টর অয়েল ও নারিকেল তেল:
ক্যাস্টর অয়েল চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় সর্বাধিক ভূমিকা রাখে। চুলের জন্য গরম তেলের ম্যাসাজ খুব ভালো কাজ করে। ক্যাস্টর অয়েল এবং নারিকেল তেল একত্রে গরম করে তা চুলে ম্যাসাজ করতে হবে। চুলে ম্যাসাজ করে তেল কমপক্ষে ৩০ মিনিটের জন্য একটি তাওয়াল দিয়ে পেঁচিয়ে রাখতে হবে।
লেবুর রস ও ডাবের পানি:
লেবুর রস ও ডাবের পানি কোঁকড়ানো চুল সোজা করতে সাহায্য করে। লেবুর রস চুলকে সিল্কি ও উজ্জ্বল করার পাশাপাশি কোঁকড়ানো চুল সোজা করতে সাহায্য করে। লেবু এবং ডাবের পানিকে একত্রে মিশিয়ে সারা রাতের জন্য রেখে দিতে হবে। তারপর সকালে উঠে চুলে এ মিশ্রণটিকে ম্যাসাজ করে করে লাগাতে হবে। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পর ধুয়ে ফেলুন। ফল পাবেন।
ডিম ও অলিভ অয়েল:
অলিভ অয়েলে হাইড্রোক্সিটাইরোসল এবং ভিটামিন “ই” রয়েছে, উভয়ই চুলের পুষ্টি যোগায়। ডিমে ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে। এক্ষেত্রে অলিভ অয়েলের সঙ্গে ২টি ডিম মিশিয়ে নিন। তারপর চুলে লাগান। তারপর কমপক্ষে ৩০ মিনিট মিশ্রণটিকে চুলে লাগিয়ে রাখতে হবে। এবং ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিতে হবে।
ডিম এবং অলিভ অয়েলের মিশ্রণ চুলকে অনেক ভালো করে কন্ডিশন করে। পাশাপাশি চুলকে সোজা করতেও ভূমিকা রাখে।
অ্যালোভেরা ও অলিভ অয়েল:
চুলের যত্নে যে অ্যালোভেরার জুড়ি নেই, তা সকলেরই জানা। অ্যালোভেরা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাছাড়া অ্যালোভেরা চুলকে নরম, স্মুদ আর ময়েশ্চারাইজও করে। চুলকে স্ট্রেট করতেও সাহায্য করে। সেক্ষেত্রে, হাফ কাপ অ্যালোভেরার রস ও হাফ কাপ গরম অলিভ অয়েল এক সঙ্গে মিশিয়ে আপনার মাথার চুলে আর স্ক্যাল্পে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। তারপর শ্যাম্পু করে চুল আস্তে করে আঁচড়ে নিন।
দুধ এবং মধু:
চুল কেরাটিন নামক প্রোটিন দিয়ে তৈরি। দুধে থাকা প্রোটিন চুল ও শরীরের জন্য উপকারী। দুধে থাকা ফ্যাট, যা চুলকে নরম ও মসৃণ করতে সাহায্য করে। মধু হল একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার যা চুলে উজ্জ্বলতা যোগায়।
চুল নরম ও সোজা করতে দুধের সঙ্গে এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। মিশ্রণটি স্প্রে বোতলে দিয়ে চুলে স্প্রে করুন। এতে কোঁকড়ানো চুল সোজা হয়ে যাবে।
নিয়মিত গরম তেল ব্যবহার করুন:
উষ্ণ গরম তেল চুলকে মসৃণ এবং সোজা করে তোলে। নারকেল তেল গরম করে চুলে লাগান। তারপর গরম পানিতে একটি তোয়ালে ডুবিয়ে, পানি ছড়িয়ে নিয়ে চুলে তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখুন। ৫ মিনিটের জন্য রাখুন। হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
নারকেল দুধ এবং লেবুর রস:
নারকেলের দুধ চুলকে পুষ্টি জোগায় এবং নরম করে। এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা ইমোলিয়েন্ট প্রদান করে। এতে অ্যাসিড রয়েছে যা মাথার ত্বকের অ্যাসিড-ক্ষারীয় ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করে।
এজন্য তাজা নারকেল দুধের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে নিন। লেবুর রস চুল সোজা করতে সাহায্য করে। এই মিশ্রণটি ৩০ মিনিট রেখে হালকা শ্যাম্পু করে নিন।