কেমন হওয়া উচিত আদর্শ মা-বাবার আচরণ।

একজন প্রকৃত পিতা মাতা তার সন্তানদের ব্যক্তিত্বের ত্রুটিগুলি দূর করে এবং ভাল গুণাবলী গ্রহণ করতে সাহায্য করে।

এখনকার দিনে অভিভাবকরা মনে করেন যে দামি জামাকাপড় এবং খাবার ও কোচিং ক্লাসের ফি প্রদান করা তাদের একমাত্র দায়িত্ব।

তারা অনেক সময় বুঝতে পারেনা যে এই জিনিসগুলি শিশুদেরকে কিছু সময়ের জন্য আনন্দ দেয়। এই আনন্দগুলি শিশুদের মধ্যে ত্রুটিগুলিকে লালন করে থাকে।

তাই অভিভাবকদের বুঝতে হবে যে তাদের সন্তান প্রকৃত শিক্ষা পাচ্ছে কিনা। পিতামাতার কর্তব্য হল শিশুদের মধ্যে ভালো গুণাবলী তৈরি করা এবং সুখী জীবনযাপন করতে সাহায্য করা।

কেমন হওয়া উচিত আদর্শ মা-বাবার আচরণ

আদর্শ মা-বাবার আচরণ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হল:

সন্তানের আত্মসম্মান বৃদ্ধি করুন:

বাচ্চারা আপনার কণ্ঠস্বর, শারীরিক ভাষা এবং আপনার প্রতিটি অভিব্যক্তি খেয়াল করে থাকে। অভিভাবক হিসেবে আপনার কথা এবং কাজ তাদের বিকাশশীল আত্মসম্মানকে প্রভাবিত করে।

তাদের কাজের প্রশংসা করা উচিত তা যতই ছোট হোক না কেন। এতে তারা গর্ববোধ করবে। বাচ্চাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিলে তারা সক্ষম এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

ছোট ছোট কিছু মন্তব্য করা বা শিশুকে অন্যের সাথে তুলনা করলে তারা মূল্যহীন বোধ করবে।

সীমা নির্ধারণ করুন এবং শৃঙ্খলার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হন:

শৃঙ্খলার লক্ষ্য হল বাচ্চাদের গ্রহণযোগ্য আচরণ এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণ শিখতে সাহায্য করা। বাড়িতে নিয়ম তৈরি করলে বাচ্চারা আপনার প্রত্যাশা সম্পর্কে বুঝতে পারে এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণ বিকাশে সহায়তা করে।

আপনি একদিন কিছু নিয়ম তৈরি করলেন এবং পরের দিন এটি উপেক্ষা করার জন্য আপনার বাচ্চাদের শাসন করতে পারবেন না।

বাচ্চাদের সময় দিন:

অনেক অভিভাবক বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানো ফলপ্রসূ মনে করেন। একসাথে থাকার জন্য প্রতি সপ্তাহে একটি বিশেষ দিন রাখুন। বাচ্চাদের সাথে বিভিন্ন খেলাধুলা এবং অন্যান্য ইভেন্টে যোগদান করুন।

ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করুন:

সন্তানকে শেখানোর সেরা উপায় হল তাদের দেখানো। মানুষ অনুকরণের মাধ্যমে শিখতে পারে। আমরা দেখে অন্যের ক্রিয়াকলাপ বুঝতে পারি এবং সেগুলিকে আমাদের নিজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি।

বিশেষ করে শিশুরা তাদের বাবা-মা যা করে তা খুব ভাল ভাবে দেখে এবং সেগুলো শেখে।

তাই আপনি আপনার সন্তানকে সম্মান করুন, ইতিবাচক আচরণ এবং মনোভাব দেখান এবং আপনার সন্তানের আবেগের প্রতি সহানুভূতিশীল হন।

তাহলে আপনার সন্তানের ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে।

সন্তানদের ভালবাসুন এবং কর্মের মাধ্যমে দেখান:

একজন অভিভাবক হিসেবে, আপনি আপনার সন্তানদের সংশোধন ও নির্দেশনা প্রদান করুন। যখন আপনি আপনার সন্তানের মুখোমুখি হন তখন দোষ দেওয়া, সমালোচনা করা এড়িয়ে চলুন।

আপনি আপনার বাচ্চাদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করুন। সন্তানের ওপর আপনার ভালোবাসা আছে এটা তাকে আপনার আচরণের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিন।

সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন:

আপনার সন্তানকে জানান যে আপনি আপনার সন্তানের প্রতি প্রতিক্রিয়াশীল এবং তাদের প্রয়োজনের প্রতি সংবেদনশীল। একজন ব্যক্তি হিসাবে আপনি আপনার সন্তানকে সমর্থন করুন।

আপনার সন্তান যেন আপনার কাছে নিরাপদ অনুভব করে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

সন্তানের সাথে কথা বলুন:

আপনার সন্তানের সাথে কথা বলুন এবং তাদের কথা শুনুন। কথা বলার মাধ্যমে আপনাদের যোগাযোগ আরো ভালো হবে এবং আপনার সন্তানের সাথে আরও ভালো সম্পর্ক তৈরি হবে।

কোনো সমস্যা হলে যেন আপনার সন্তান আপনার কাছে আসতে পারে। এটি আপনার সন্তানের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

রেফারেন্স: