করোনা ভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে আমাদের কি করা উচিত এবং কি করা উচিত নয়।

বিশ্বব্যাপী একশটিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস এবং সম্প্রতি বাংলাদেশেও তিনজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে আমাদের সকলের মাঝে করোনাভাইরাস নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কাটিয়ে কি করলে আমরা সুস্থ থাকতে পারব আসুন জেনে নেই সে সম্পর্কে।

বার বার হাত ধুতে হবে:

করোনা ভাইরাস সাধারণত চামড়া দিয়ে প্রবেশ করতে পারে না এটি মানবদেহে প্রবেশ করে চোখ, নাক, মুখ ও ক্ষতস্থান দিয়ে। তাই আমরা যেন বারবার সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুই এবং হাত না ধুয়ে যেন মুখ, চোখ, নাকে হাত না দিই। হাঁচি কাশি দেবার পর খাবার আগে ও পরে বা বাইরে থেকে ঘরে ফিরে ভালোভাবে হাত ধুই।

হাত দিয়ে চোখ, নাক, মুখ স্পর্শ নয়:

হাত দিয়ে আমরা কত কিছুই না স্পর্শ করে থাকি তাই এখন থেকে হাত দিয়ে যে কোন কিছু স্পর্শ করার ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে। বিশেষ করে আমরা বাইরে গেলে যানবাহনের হাতল ধরি যেটি আরো বহু লোক ধরে এই রকম আরো অনেক কিছু স্পর্শ করার মাধ্যমে ভাইরাস আমাদের হাতে লেগে যেতে পারে। এবং সেই হাত আমরা চোখ নাক মুখে স্পর্শ করলে আমাদের শরীরে ঢুকতে পারে। তাই আমাদের বাইরে গেলে হাত দিয়ে নাক মুখ স্পর্শ করার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে এবং বাইরে থেকে আসার পর হাত না ধুয়ে মুখমন্ডলে স্পর্শ করবেন না।

চলাচলের ক্ষেত্রে দূরত্ব বজায় রাখুন:

চলাচলের ক্ষেত্রে আশপাশের মানুষের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন এবং এই দূরত্ব এক হাত বা ৩ ফুট হলে বেশি ভালো হয়। তবে আমাদের মত জনবহুল দেশে এটি মানা বেশ কষ্টকর। এছাড়া সর্দি-কাশি জ্বর অসুস্থ ব্যক্তির কাছ থেকে ও এই সময় দূরত্ব বজায় রাখুন।

হাঁচি-কাশিতে সাবধানতা:

হাঁচি-কাশিতে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করুন যেমন হাঁচি-কাশির সময় অবশ্যই টিস্যু অথবা রুমাল ব্যবহার করুন এবং এটি নিরাপদ জায়গায় ফেলুন।

শুভেচ্ছা বিনিময়ে সর্তকতা:

এইসময় হ্যান্ডশেক ও কোলাকুলির মাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনিময় পরিহার করুন কারণ অনেক বিশেষজ্ঞ বলছে হ্যান্ডশেক ও কোলাকুলির মাধ্যমে করোনা ভাইরাস অন্যের দেহে সংক্রমণ হতে পারে।

মাস্ক এর ব্যবহার:

আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য মাস্ক ব্যবহার খুবই জরুরী কারণ আক্রান্ত ব্যক্তি মাস্ক ব্যবহার না করলে তার থেকে অন্যের শরীরে ছড়াতে পারে এই ভাইরাস আর আক্রান্ত ব্যক্তি মাস্ক পড়লে ভাইরাস ছড়ানোর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু আপনি যদি সুস্থ থাকেন তাহলে মাস্ক তেমন কাজ নাও করতে পারে। তাই অযথাই মাস্কের স্টক করবেন না বাসায়।

খাবারে সাবধানতা:

মাছ মাংস কাটার পর ভালো করে হাত ধুয়ে নিবেন। মাছ, মাংস ও ডিম ভালো করে রান্না করে খাবেন।

গণপরিবহন ব্যবহারে সর্তকতা:

এই সময় গণপরিবহন অর্থাৎ বাস-ট্রেন কিংবা অন্য যেকোন গণপরিবহন ব্যবহারে সর্তকতা অবলম্বন করুন। গণপরিবহনে চলাচলের সময় মাস্ক ব্যবহার করুন এবং এর হাতল বা সিটে হাত দিলে দ্রুত হাত পরিষ্কার এর ব্যবস্থা করুন।

জনসমাগম এড়িয়ে চলুন:

এই সময় জনসমাগম অর্থাৎ যেখানে বহু মানুষের আনাগোনা এমন স্থান এড়িয়ে চলতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। সামাজিক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান বিয়ের অনুষ্ঠান যেখানে অনেক মানুষের সমাগম হতে পারে এমন জায়গা এড়িয়ে চলাই ভালো।

ভ্রমণে সাবধানতা:

এই সময়ে বিদেশ ভ্রমণের সাবধান হতে হবে এবং খুব প্রয়োজন না হলে বিদেশ ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে হবে। এবং যে সমস্ত দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে ওই সমস্ত দেশ ভ্রমণ না করাই শ্রেয়।

লিফট ব্যবহারে সচেতনতা:

আপনার বাড়ি কিংবা অফিসের লিফট ব্যবহারের সতর্ক হোন কারণ এটি প্রতিদিন শত শত মানুষ বিভিন্ন ফ্লোরে যাওয়ার জন্য এর বাটন ব্যবহার করে এবং এখান থেকেও ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে।

এছাড়া এটিএম বুথের বাটন, ব্যাংকের কলম যেটি সুতা দিয়ে বাঁধা থাকে এবং অনেকেই ব্যবহার করে, এইরকম সকল কিছু যা আমরা অনেকে মিলে কমন ভাবে ব্যবহার করি সেগুলো ব্যবহারে সচেতন হতে হবে এবং ব্যবহারের পর নিয়মিতভাবে হাত পরিষ্কার করতে হবে।