অ্যাভোকাডো তারুণ্য বজায় রাখতে, ত্বকের শুষ্কতা ও চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
অ্যাভোকাডোতে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন এবং খনিজগুলির কারণে ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আভাকাডো তেল বিভিন্ন ধরনের ক্রিম, ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিনে ব্যবহার করা হয়।
এই ফলটিতে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বেশি নয়, ভিটামিন “ই” এবং “সি”-এর একটি চমৎকার উৎস। এই সব ভিটামিন ও মিনারেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে পুষ্টি জোগায়। সৌন্দর্যচর্চায় নানাভাবে ব্যবহার করা হয় অ্যাভোকাডো।
অ্যাভোকাডো ত্বকের যত্নে অতুলনীয়। কারণ অ্যাভোকাডো ভিটামিন “সি” সমৃদ্ধ এবং ভিটামিন “ই”, যা উভয়ই ত্বককে স্বাস্থ্যকর, ময়েশ্চারাইজ করতে সহায়তা করে এবং ত্বকে লাবণ্য আনতে সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নে অ্যাভোকাডো
চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক, ত্বকের যত্নে অ্যাভোকাডো কিভাবে ব্যবহার করবেন-
ত্বকের যত্ন নেয়:
লাফ্লোর প্রোবায়োটিক স্কিনকেয়ারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মায়া ইভানজেস্কুর মতে, অ্যাভোকাডোতে থাকা ফ্যাট, যৌগ এবং ভিটামিনগুলি ত্বকের সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে এবং একজিমা ও ব্রণের মতো দীর্ঘস্থায়ী ত্বকের অবস্থার উন্নতি করতে সহায়তা করতে পারে।
ত্বকের ক্ষতি রোধ করে:
অ্যাভোকাডো ত্বকের ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করে। ২০১১ সালের গবেষণা দেখায় যে, অ্যাভোকাডোতে এমন যৌগ রয়েছে যা ত্বককে সূর্যের ক্ষতি এবং প্রদাহ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
কালচে ভাব দূর করতে:
ত্বকের নানা ধরণের কালচে ভাব দূর করতে অ্যাভোকাডোর থেকে ভালো উপাদান আর কিছু নাই। এজন্য আমাদের আগে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। অর্ধেকটা অ্যাভোকাডো, ২ চামচ মধু ও ডিমের সাদা অংশ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।
তারপর মিশ্রণটি সারা মুখে লাগান। ২০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের কালচে ভাব দূর করে ত্বক উজ্জ্বল করবে।
ত্বকের নমনীয়তা উন্নত করে:
২০১০ সালের একটি গবেষণায় ৭০০ জন মহিলার ত্বকের নমনীয়তা উন্নত করে। অ্যাভোকাডোতে থাকা উচ্চমাত্রার ফ্যাট – বিশেষত স্বাস্থ্যকর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট – ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বা নমনীয়তা বাড়াতে সাহায্য করে।
মরা কোষ দূর করতে:
অ্যাভোকাডো, ২ চামচ চিনি ও ১ চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে ২০ মিনিট মুখে হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন। এই মিশ্রণটি ত্বকের মরা কোষ দূর করে ত্বককে নরম ও মসৃণ করে।
ময়শ্চারাইজ করে এবং পুষ্টি যোগায়:
ভিটামিন “ই” ছাড়াও, অ্যাভোকাডো তেলে পটাসিয়াম, লেসিথিন এবং অন্যান্য অনেক পুষ্টি রয়েছে যা ত্বককে পুষ্ট এবং ময়শ্চারাইজ করতে পারে।
ত্বকের বাইরের স্তর, যা এপিডার্মিস (epidermis) নামে পরিচিত। ত্বকের বাইরের স্তর সহজেই অ্যাভোকাডোর পুষ্টিগুলি শোষণ করে, যা নতুন ত্বক গঠনে সাহায্য করে।
চোখের নিচের কালো দাগ ও বলিরেখা দূর করতে:
চোখের নিচের কালো দাগ ও বলিরেখার মতো সমস্যায় ভোগেন। ঘুমানোর আগে অ্যাভোকাডো হাতে চটকে নিয়ে চোখের চারপাশে হালকাভাবে ম্যাসাজ করতে পারেন। অ্যাভোকাডোর ভিটামিন “ই” এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট চোখের নিচের কালো দাগ ও বলিরেখা দূর করে সহজেই।
শুষ্কতা দূর করে:
অ্যাভোকাডো বায়োটিনের একটি বড় উৎস, যা বি কমপ্লেক্স ভিটামিনের অংশ। বায়োটিন শুষ্ক ত্বক প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এটি চুলের রুক্ষতা দূর করতে সাহায্য করে।
মেকআপ রিমুভার হিসেবে:
মেকআপ রিমুভার হিসেবে অ্যাভোকাডো খুবই কার্যকর। অ্যাভোকাডো কেটে নিয়ে তুলা দিয়ে এর তেল মুখে ভালো করে লাগান। ১-২ মিনিট রেখে তুলা দিয়ে মুখ মুছে ফেলুন। এই তেল মেকআপ ওঠার পর ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখবে।
ঠোঁটের মরা কোষ দূর করতে:
ঠোঁটের মরা কোষ দূর করতেও অ্যাভোকাডো ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে, অ্যাভোকাডোর সঙ্গে সামান্য পিপারমেন্ট অয়েল ও লবণ মিশিয়ে ১০ মিনিট হালকাভাবে ঠোঁট ম্যাসাজ করুন।
তারুণ্য বজায় রাখতে:
ব্যস্তময় জীবনে ত্বকের যত্ন না নেওয়ার ফলে কম বয়সেই ত্বক বলিরেখা পড়ে। এ সমস্যার সমাধান করতে পারে অ্যাভোকাডো। এতে রয়েছে ভিটামিন “সি” ও ভিটামিন “ই” এর মতো গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা ত্বকের পুষ্টি জোগায় এমনকি বয়সের ছাপ, বলিরেখা পড়া নিয়ন্ত্রণ করে।
ব্রণ কমাতে:
ব্রণ একটি সাধারণ সমস্যা হলেও অনেকের মধ্যেই সেটা তীব্র মাত্রায় দেখা যায়। এ থেকে বাঁচতে অ্যাভোকাডো ব্যবহার করতে পারেন। ব্রণের উপর সামান্য একটু অ্যাভোকাডো কেটে লাগিয়ে রাখুন। ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমে যাবে এমনকি আরাম ও পাবেন।