শীতকালে ঠোঁট ফেঁটে কষ্ট পাচ্ছেন, জেনে নিন পরিত্রাণের উপায়।

আমাদের শরীরের খুবই ছোট্ট একটা অংশ এই ঠোঁট। কিন্তু জীবন নামক এই গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে এই ঠোঁট প্রতিদিন অবিরাম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পলিন করে যাচ্ছে। সারাদিন কথা বলছি, খাওয়াদাওয়া করছি, একে অপরের সাথে মতামত বিনিময় করছি, সবকিছুতেই ঠোঁট সাহায্য করে যাচ্ছে।

ঠোঁট মানুষের চেহারার সবথেকে প্রমিন্যান্ট অংশ। নরম তুলতুলে গোলাপি ঠোঁট সবার কাম্য। এই ঠোঁট চেহারার সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে এবং মুখটাকে সুন্দর করে তোলে। অপরদিকে ফাটা ঠোঁট ভালো চেহারাটাকে নষ্ট করে দেয়। শীতকালে ঠোঁট ফাটা একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। একটু যত্ন না নিলে ঠোঁট ফেঁটে চামড়া উঠে যায় এমনকি ব্যাথা হয়ে রক্ত পর্যন্ত বের হয়।

আমাদের প্রত্যেকের অতিপ্রিয় ঠোঁট দুটিকে শুষ্কতার হাত থেকে বাঁচিয়ে সতেজ, সজীব, স্বাস্থ্যকর রাখতে রীতিমতো আমাদের যুদ্ধ করতে হয়। সারাবছরই শুস্ক ও রুক্ষ ঠোঁট নিয়ে সকলেই দুশ্চিন্তায় পড়েন। শীতকালে ঠোঁট দুটিকে স্বাস্থকর অর্থাৎ আদ্র ও সতেজ রাখাটা দিন দিন কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমাদের সমস্ত শরীরে তৈলগ্রন্থি বিদ্যমান। মজার ব্যাপার হলো মানুষের ঠোঁটে কোনো তৈলগ্রন্থি নাই। প্রকৃতপক্ষে, মানুষের ঠোঁটের চামড়া খুবই পাতলা।

এখন প্রশ্ন হলো কেন ঠোঁট(lip)ফাটে? এর থেকে বাঁচার উপায় কি?

ঠোঁট(lip)ফাটর কারণ

নিচে ঠোঁট(lip)ফাটর কারণসমূহ দেওয়া হলো:

  • পানি কম খেলে।
  • অতিরিক্ত ধূমপান করলে।
  • ভিটামিনের অভাব হলে।
  • বেশি বেশি গরম খাবার, ড্রাই ফুডস, তেলচর্বি ও মসলা জাতীয় খাবার খেয়ে শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকলে।

ঠোঁট ফাঁটা কিভাবে দূর করা যায়?

  • যেকোনো তেল (নারকেলের তেল, সর্ষের তেল, অলিভ অয়েল) তো ঘরেই থাকে। এছাড়া দুধের সর, ঘি, অনেকের ঘরে থাকে। দিনে কয়েকবার এগুলা লাগান।
  • মধু লাগান। মধু প্রাকৃতিক এন্টিসেপটিক । মধু +লেমন জুস +চিনি +ঘি এর পেস্ট বানিয়ে ঠোঁটে লাগান।
  • খিরাইতো সারাবছর হাতের কাছে পাওয়া যাই। স্লাইস করে বা রস করে যেকোনো ভাবে লাগান।
  • অ্যালোভেরাতে হিলিং প্রোপারটিস বিদ্যমান। এটা লাগালে জ্বলন কমে যাবে।
  • পেট্রোলিয়াম জেলি/ vaselin লাগান।
  • মার্কেট থেকে লিপবালম কিনে লাগাতে পারেন। এলার্জি থাকলে এড়িয়ে চলুন।
  • রাতে ঘুমানোর আগে গ্লিসারিন লাগান।

বন্ধুরা, আমরা দেখলাম শুস্ক রুক্ষ আবহাওয়ার পাশাপাশি আরো অনেক কারণে আমাদের ঠোঁট ফাটে এবং এর সমাধানও আমরা জানলাম।

পরিত্রাণের উপায়

পরিশেষে, আরো একটা দিকে আমাদের নজর দিতে হবে। বন্ধুরা, আমাদের একটু গোড়ায় যেতে হবে। আমাদের রুট খুঁজে বের করতে হবে। সমস্যাটা আমাদের শরীরের ভিতরে।

শরীরের ভিতরের তাপমাত্রা কমাতে হবে। তেল, ভ্যাসলিন যেটাই মাখছি সাময়িক বাতাস না লাগতে পারাই হয়তো ঠোঁট আদ্র থাকছে। কিন্তু এটা তো স্থায়ী সমাধান নয়। যখন আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাই তখন পিত্ত বেড়ে যায়। সমস্যাটা দূর করার জন্য আমাদের কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।

  • বেশি করে পানি পান করতে হবে। বদঅভ্যাস বলেন বা অলসতা যেটাই হোক, পানি বা জল হাতের কাছে থাকা সত্বেও আমরা পর্যাপ্ত (দৈনিক ১০ থেকে ১২ গ্লাস) পানি পান করি না। পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান-সব থেকে সহজ পথ ঠোঁটকে বাঁচানোর।
  • শীতকালে বেশি বেশি গরম খাবার খাবেন না।
  • ড্রাই ফুডস, তেলচর্বি ও অধিক মশলা জাতীয় খাবার শীতকালে কম খান।
  • অতিরিক্ত ধূমপান করবেন না। এলকোহল বা মদ পরিহার করুন।
  • শরীরের পুষ্টির অভাব পূরণের জন্য প্রচুর পরিমানে টাটকা সবজি ও ফলমূল খান।

Leave a Reply