বেতফল, বেত গাছের মূল-দাঁতের গোড়া শক্ত, শুক্রাণু বৃদ্ধি ও মূত্র সমস্যা দূর করে।
বেত গাছের ফলকে বেতফল, বেত্তুন, বেথুন, বেথুল, বেতগুলা, বেতগুটি, বেত্তুইন ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। বেতগাছের বৈজ্ঞানিক নাম Calamus tenuis, যা Arecaceae পরিবারভুক্ত। এটি বাংলাদেশ, ভুটান, কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ভারত, জাভা ও সুমাত্রা অঞ্চলের উদ্ভিদ।
বেতফল গোলাকার বা একটু লম্বাটে গোলাকার, ছোট ও কষযুক্ত টকমিষ্টি। এর খোসা শক্ত হলেও ভেতরটা নরম। বীজ শক্ত। কাচা ফল সবুজ ও পাকলে সবুজাভ ঘিয়ে বা সাদা রঙের হয়। এটি থোকায় থোকায় ফলে। বেতগাছে ফুল আসে অক্টোবর মাসে আর ফল পাকে মার্চ-এপ্রিল মাসে। এটি অপ্রচলিত ফল হলেও অনেকের কাছে খুবই প্রিয়।
বেত ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের ভেজা ও জংলা নিচুভূমিতে ভাল জন্মে। এটি বর্তমানে আবাসন সংকটের জন্য বিপন্ন প্রজাতি।বেতগাছ চিকন, লম্বা, কাঁটাময় ও খুবই শক্ত। এটি জঙ্গলাকীর্ন কাঁটাঝোপ আকারে জন্মে।বেত কাঁটাময়, চিরসবুজ, অরোহী পাম। কাণ্ড লম্বা, কাঁটাযুক্ত ও শাখাহীন। সরু ও নলাকার কাণ্ড প্রস্থে সাধারণত ৫-১৫ মিলিমিটার।
প্রতিটি কাণ্ডের আগা থেকে নতুন পাতা বের হয় ও বেড়ে ওঠে। কাণ্ড বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর নিচের অংশ পোক্ত হতে থাকে। কোনো ধারককে ধরে রাখার জন্য কাঁটাযুক্ত ধারক লতা বের হয়। বেতে ফুল ধরার আগে গাছ থেকে একধরনের মিষ্টি ঘ্রাণ আসে। তখন মৌমাছি, পিঁপড়া, মাছি আসে সেই রস খেয়ে মাতাল হওয়ার জন্য।
এটির আদি আবাস হিমালয়ের উষ্ণ এলাকা, বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার।বেত অতি মূল্যবান ও অর্থকরী উদ্ভিদ। উন্নতমানের হ্যান্ডিক্রাফট, গৃহের আসবাবপত্র তৈরির জন্য বেতের ব্যবহার বেশি। কস স্বাদযুক্ত ফল গ্রামীণ শিশুদের অতি প্রিয়। এ ফল বাজারে বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেতের কচি কাণ্ড তরকারি হিসেবেও খাওয়া হয়।
এবার তবে জেনে নিন বেত ফলের উপকারিতা বা স্বাস্থ্যসুবিধা সম্পর্কে-
এটি যেমন পুষ্টিকর তেমন সুস্বাদু ও ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ। মূলত মাটির অবস্থা ভেদে এই ফল খুব মিষ্টি হয়। আবার স্থান ভেদে একটু টকও হয়। বেতফল মরিচ দিয়ে চাটনি করে খেতে খুব মজাদার। বাংলা মাসের চৈত্র, বৈশাখ এবং জ্যৈষ্ঠ মাসে বেতফল পাকে। পাকা বেতফল এমনিতেই খেতে দারুণ সুস্বাদু।
দাঁতের গোড়া শক্ত করতে :
শুক্রাণু বৃদ্ধি ঘটায়:
যাবতীয় রোগ নিরাময়ে:
সতর্কতাঃ
আজ বেত অনেকটাই দুষ্প্রাপ্য হওয়ায় তার স্থান দখল করেছে প্লাস্টিকের দড়ি বা রশি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মানুষ বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড় কেটে পরিষ্কার করে সেখানে ঘরবাড়ি তৈরি করছেন। এতে যেমন প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে একটি প্রয়োজনীয় প্রজাতির লতানো গাছ, তেমনি হারাচ্ছে প্রকৃতির ভারসাম্য।
সূত্রঃ
rxlist.com