“ফাগুন” এসেছে ধরায়, বাংলার প্রকৃতি তার যৌবন ফিরে পেয়েছে ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে।
সারা বিশ্বের মানুষের উপভোগ ও ঘুরে বেড়ানোর জন্য Spring season- এর আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। ঋতুরাজ বসন্ত আমাদের বাঙ্গালীদের জীবনে অনেকটাই প্রভাব বিস্তার করে থাকে। ফাল্গুন মাস বাঙালি ক্যালেন্ডারের ১১তম মাস এবং Spring season (বসন্ত কালের) ১ম মাস। ফাল্গুন মাস আর চৈত্র মাস নিয়ে আমাদের বসন্তকাল। ছয়ঋতুর মধ্যে রাজা কে? বসন্ত। কেন?
দীর্ঘ শীতের জড়তা কাটিয়ে অর্থাৎ কিছুটা আলসে বানিয়ে শীত বিদায় নেয়ার সাথে সাথে শীতের রুক্ষতা কাটিয়ে নতুন ভাবে জেগে ওঠার উন্মাদনা কাজ করে। ঠিক যেভাবে প্রকৃতি নতুন ভাবে জেগে ওঠে।
নিয়ে আসে – পরিষ্কার মৃদু সূর্যকিরণ
ফুলের মুকুল অর্থাৎ বিকাশমান বা স্ফ্যুটম্মুখ ফুলের কুঁড়ি।
নৃত্যরত পাখি বা কলকাকলিতে মগ্ন পাখির ঝাঁক।
সদ্য জন্ম নেয়া গাছের পাতা, ডাল নতুন করে তাদের জীবন শুরু করে। শিমুল, পলাশ ও গাঁদা ফুলের গাছে যেনো রঙের জোয়ার বইছে। ফাগুনের মাঝামাঝি এই সময়ে লেবু গাছের সাদা ফুল থেকে কি সুন্দর সুবাস ছাড়াচ্ছে। কেন জানি আমের মুকুল আমাকে একটু বেশি প্রভাবিত করে।
চারিদিকে গর্ভবতী আমগাছ ও কাঁঠালগাছ গুলো দেখলে অনেক ভালো লাগে। এরই মাঝে মেঘরাজ প্রচন্ড হুঙ্কার ছেড়ে তার আগমন জানান দিলে সবাই ভয়ে তটস্থ হয়ে পড়ে। হয়তো গর্ভবতী গাছগুলো একে অপরকে বলছে- মেঘরাজকে সন্মান কর। নইলে আজকে কারো আর রক্ষে নেই। বিষাদের কথা না হয় নাই বলি।
ফাগুনের ১ম দিনে মেয়েরা হলুদ ও কমলা রঙের শাড়ি পরে এবং ছেলেরা বিভিন্ন কালারফুল পাঞ্জাবি পরে ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলা পহেলা ফাল্গুন উদযাপনের মূল কেন্দ্রবিন্দু।
হাজার হাজার কিশোরে-কিশোরী, তরুণ তরুণীর ঢল নাম এখানে।ফাগুনের গান, কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্যে মুখর থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও একুশে বইমেলা এলাকা জমজমাটপূর্ণ মহা আনন্দের মিলন মেলায় পরিণত হয়। বন্ধু-বান্ধব, পরিবারের সদস্য ও প্রেমিক-প্রেমিকা নিয়ে সবাই দারুন উপভোগ করে।
পহেলা ফাল্গুন শুধু প্রকৃতিতে আশা জাগায় না। প্রকৃতিকে রং লাগিয়ে আনন্দে ভরিয়ে দেয় না। বসন্ত আমাদের শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ সকল বয়সী মানুষের মনে ও জীবনে আশা জাগায়। জীবনকে আনন্দে ভরিয়ে দেয়।