ত্বকের জন্য উপকারী সরিষার তেল।
৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে ভারতে সরিষা প্রথম জন্মেছিল এবং এটি তার ঔষধি মানের জন্য বেশি পরিচিত হয়েছিল। সরিষার তেল যা সরিষা বীজ থেকে হয়।
এই তেল মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ এবং প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সরিষা তেল ওমেগা 3 এবং ওমেগা 6 ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস সমৃদ্ধ। এই তেল কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে, সর্দি ও কাশি উপশম করতে পারে এবং চুল ও ত্বক সম্পর্কিত সমস্যা দূর করতে পারে।
সরিষার তেলের ওষুধি গুণাগুণের জন্য প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ঐতিহ্যগতভাবে, ভারতের এবং বাংলাদেশের, শিশুদের প্রায়শই সরিষার তেল গায়ে মাখানো হয়।
আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক, ত্বকের জন্য সরিষার তেল কতটা উপকারী-
মুখের কালো দাগ দূর করে:
সরিষার তেলে ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি ভিটামিন “ই” রয়েছে। অতএব, ত্বকে প্রয়োগ করার সময়, সূক্ষ্ম রেখা এবং বলিরেখা কমে এবং এটি সানস্ক্রিন হিসাবে কাজ করে। মুখের কালো দাগ দূর করতে সরিষার তেল দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক উপকারী। এর জন্য ২ চামচ সরিষার তেল, ১ চামচ বেসন, ১ চামচ দই এর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে নিন।
একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
শুষ্ক ত্বক মসৃণ করে:
সরিষা তেল মাথা ব্যথা কমায়। শুষ্ক ত্বক মসৃণ ও কোমল করে। ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করে এবং ত্বকের প্রদাহ দূর করে। শীতের সময় সরিষার তৈল মাখলে ত্বক সুন্দর থাকে। পোকামাকড় সরিষার তেল সহ্য করতে পারে না। এই তেল ব্যবহার করে পোকামাকড় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ট্যান দূর করে:
রোদ শরীরের জন্য ভালো হলেও অতিরিক্ত রোদ নানা সমস্যার কারণ হতে পারে। রোদ থেকে বাঁচতে সানস্ক্রিন হিসাবে সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া সরিষার তেলের ফেসপ্যাক প্রয়োগ করলে ত্বকের ট্যান কমে যায়।
ত্বক উজ্জ্বল করে:
ত্বক উজ্জ্বল করার জন্য আমরা কত কিছুই না ব্যবহার করি। সরিষার তেলের ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়। সেক্ষেত্রে, রাতে শোয়ার সময় নিয়মিত সরিষা এবং নারিকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করুন।
ত্বকে বার্ধ্যক্যের কমায়:
সরিষার তেল ত্বকে বার্ধ্যক্যের ছাপ পড়তে দেয় না। নিয়মিত সরিষার তেল ব্যবহারে ত্বকে বার্ধ্যক্যের ছাপ পড়ে না।
ফাটা ঠোঁটের জন্য উপকারী:
শুধু ফাটা ঠোঁটই নয় ফাঁটা ত্বকের জন্য সরিষার তেল উপকারী। অনেকেরই সারা বছরই কম বেশি ঠোঁট ফাঁটার সমস্যা আছে। রাতে ঘুমানোর সময় ঠোঁটে সরিষা তেল দিয়ে রাখলে ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন:
সরিষার তেলকে প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন বলা যায়। এই তেলে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন “ই” থাকে। ভিটামিন “ই” বলিরেখা ও বয়সের ছাপ দূর করতেও সাহায্য করে। তাই সানস্ক্রিন লোশনের মতোই ব্যবহার করতে পারেন সরিষার তেল।
ব্রণ কমাতে সাহায্য করে:
ত্বকে ব্রণ হলে সরিষা তেল ব্যবহারে উপকার পাওয়া যাবে। এছাড়া মুখে ব্রণ কমে গেলেও দাগ থেকে যায়। তাই এর সমাধান হলো সরিষার তেল। দুই চামচ সরিষার তেল নিয়ে তার মধ্যে এক চামচ নারকেল তেল, এক চামচ লেবুর রস আর দুই চামচ টকদই দিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে সারা মুখে লাগান। নিয়মিত ব্যবহারে শুধু দাগ যাবে না, সঙ্গে মুখের জেল্লাও বাড়বে।