কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি? কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের বিভিন্ন অংশের নাম।

কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি?


হার্ডওয়্যার (Hardware) হলো কম্পিউটারের সকল স্পর্শযোগ্য উপাদানগুলোর একটি গ্রুপ। একটি কম্পিউটার বিভিন্ন হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের সংমিশ্রণ নিয়ে গঠিত হয়।

সফটওয়্যার কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ছাড়া অকেজো কারণ সফটওয়্যার হার্ডওয়্যারের মাধ্যমে সঞ্চালিত হয়। ইনপুট হার্ডওয়্যার ব্যবহার করে কম্পিউটারে ইনপুট প্রদান করে এবং আউটপুট হার্ডওয়্যার ডিভাইসের সাহায্যে আউটপুট প্রদান করে।

Computer_hardware

Hardware কম্পিউটার একটি ভৌত উপাদান এবং এই উপাদানটি Circuit board এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স নিয়ে গঠিত। হার্ডওয়্যার এর মধ্যে কম্পিউটারের বডি সামগ্রিকভাবে তৈরি করা হয়। অর্থাৎ, কম্পিউটারে কিবোর্ড, মাউস, প্রিন্টার ইউপিএস, মনিটর এইগুলো সবই হচ্ছে হার্ডওয়ার।

কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের বিভিন্ন অংশের নাম:


কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ডিভাইসগুলোকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন:

  • ইনপুট ডিভাইস (Input Device)
  • প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট (processing Unit)
  • আউটপুট ডিভাইস (Output Device)
  • মেমরি বা স্টোরেজ ডিভাইস (Memory storage)
  • কম্পিউটারের ইনপুট ডিভাইস (Input Device) সমূহ:


মাউস:

Mouse
মাউসের সাহায্যে কম্পিউটার কার্সার নিয়ন্ত্রণ এবং কম্পিউটার স্ক্রিনে সমস্ত ধরণের পাঠ্য, টেক্সট, ফাইল, আইকন নির্বাচন করতে পারে।

কীবোর্ড:

Keyboard
কীবোর্ড হলো টাইপরাইটারের ধারণা থেকে আসা এমন একটি ডিভাইস, যাতে কিছু বাটন বিন্যস্ত থাকে, যেটি মেকানিক্যাল লিভার অথবা ইলেক্ট্রনিক সুইচের মতো কাজ করে।

অথবা, কীবোর্ড হলো কম্পিউটারের প্রধান ইনপুট ডিভাইস। কীবোর্ডের কীসমূহে কী ছাপানো থাকে। কোনো চিহ্ন তৈরি করতে হলে এক বা একাধিক কী চাপতে অথবা চেপে ধরে রাখতে হবে।

ট্র্যাকবল:

Trackball
ট্র্যাকবল একটি ছোট চলমান বল পৃষ্ঠের উপর স্থাপন করা হয় এবং এই বলটি ব্যবহার করে কম্পিউটার স্ক্রিন যেকোনো দিকে সরানো যায়।

টাচপ্যাড:

Touchpad
টাচপ্যাড মাউস ডিভাইসের সেরা বিকল্প। টাচপ্যাডে স্পর্শ করে কম্পিউটারে ইনপুট দেওয়া হয়। বেশিরভাগ এই উপাদানটি ল্যাপটপে এম্বেড করা হয়।

টাচ স্ক্রিন:

Touch screen
টাচ স্ক্রিন ব্যবহারকারীরা অন্য কোনও উপাদান ছাড়াই তাদের নিজস্ব আঙ্গুল দিয়ে যেকোনো পাঠ্য, এবং ফাইল নির্বাচন করতে পারেন।

লাইট পেন:

Light pen
লাইট পেন হলো একটি কম্পিউটার ইনপুট যন্ত্র, যা দেখতে লম্বা সরু লাঠির মতন। লাইট পেন প্রদর্শনীর পিক্সেলের ঔজ্জ্বল্যের পরিবর্তন ধরতে পারে যখন সিআরটি প্রদর্শনীর ইলেক্ট্রন রশ্মি স্ক্যান করা হয় এবং কম্পিউটারের সাথে এই পরিবর্তনের সময় পাঠায়।

স্টাইলাস:

Stylus
স্টাইলাস ইনপুট ডিভাইস দেখতে একটি ছোট ধরনের কলম আকৃতির মত, এই উপাদানটির উদ্দেশ্য হলো কম্পিউটার স্ক্রীন এবং গ্রাফিক ট্যাবলেটে ইনপুট নির্দেশনা দেওয়া।

ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার:

Fingerprint scanner
ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানে ব্যবহারকারীরা তাদের আঙুল চাপ প্রদান করে। এই ডিভাইসটি প্রমাণ সনাক্তকরণ করতে ব্যবহৃত হয়।

মাল্টি-টাচ স্ক্রিন:

Multi-touch screen
এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে একাধিক ব্যবহারকারী একই সময়ে ইনপুট দিতে পারে।

গেম প্যাড:

Gamepad
গেমপ্যাড মূলত গেম খেলার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যা উভয় হাত দ্বারা পরিচালনা করা যেতে পারে।

জয়স্টিক:

Joystick
জয়স্টিক হল একটি ইনপুট ডিভাইস যাতে একটি স্টিক বা লাঠি সদৃশ বস্তু যন্ত্রের উপরিভাগে বসানো থাকে যা দিয়ে বিভিন্ন কোন বা অভিমুখে এর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কোন যন্ত্রকে পরিচালনা করা যায়।

মাইক্রোফোন:

Microphone
মাইক্রোফোন এক ধরনের যন্ত্র, যাকে কথ্য ভাষায় মাইক ও বলা হয়ে থাকে। এটি এক ধরনের সেন্সর হিসেবে কাজ করে, যা শব্দ শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তর করে।

ওয়েবক্যাম:

Webcam
ওয়েবক্যাম হলো বিশেষ ধরনের ভিডিও ক্যামেরা যা একটি কম্পিউটারের সাথে ইউএসবির মাধ্যমে যুক্ত হয়ে ইন্টারনেটে ভিডিও আদান-প্রদান করতে পারে।

ডিজিটাল ক্যামেরা:

Digital camera
ডিজিটাল ক্যামেরা বলতে এমন ক্যামেরা বোঝায়, যেগুলোতে সনাতনী ফিল্ম ব্যবহৃত হয় না, বরং তার বদলে মেমরী চিপের মধ্যে ছবি ধারণ করে রাখার ব্যবস্থা থাকে।

  • কম্পিউটারের প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট (processing Unit) ডিভাইস সমূহ:


মাইক্রোপ্রসেসর:

Microprocessor
মাইক্রোপ্রসেসর বলতে এক শ্রেণীর অতিক্ষুদ্র ইলেকট্রনীয় যন্ত্র বা যন্ত্রাংশকে বোঝায়, যেটি ডিজিটাল কম্পিউটারের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াজাতকরণ অংশের কাজগুলি সম্পাদন করার জন্য প্রয়োজনীয় গাণিতিক, যুক্তিভিত্তিক ও নিয়ন্ত্রণমূলক ইলেকট্রনীয় বর্তনী ধারণ করে রাখে।

সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (CPU):

CPU
সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিটের সাহায্যে সমস্ত নির্দেশাবলী যেমন যৌক্তিকভাবে, গাণিতিকভাবে এবং ০/১ অপারেশন ব্যবহারকারীদের দ্বারা দেওয়া হয়।

গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট (GPU):

GPU
গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট একটি প্রসেসর যা ভালো মানের ভিডিও এবং ছবি রেন্ড করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

মাদারবোর্ড:

Motherboard
মাদারবোর্ড কম্পিউটারের হৃদয় কারণ সমস্ত প্রসেসর এবং অন্যান্য উপাদান মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত থাকে।

নেটওয়ার্ক কার্ড:

Network card
নেটওয়ার্ক কার্ড একাধিক কম্পিউটার এবং কম্পিউটারের অন্যান্য ডিভাইস সংযোগ করতে সাহায্য করে।

সাউন্ড কার্ড:

Sound card
কম্পিউটারে সাউন্ড কার্ড একই সাথে ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস হিসেবে কাজ করে। যে কার্ডের মাধ্যমে আমরা কম্পিউটারে কোন শব্দকে ইনপুট হিসেবে দিতে পারি এবং আউটপুট হিসেবে শব্দ শুনতে পারি সেটিই হচ্ছে সাউন্ড কার্ড।

ভিডিও কার্ড:

Video card
ভিডিও প্রসেসিং করতে ব্যবহার করে এবং এর মাধ্যমে একটি ভাল মানের ভিডিও তৈরি করা যায়।

  • কম্পিউটারের আউটপুট ডিভাইস (Output Device) সমূহ:


মনিটর:

Monitor
মনিটর হলো সেই সরঞ্জাম যাতে সিস্টেমে চলমান প্রক্রিয়া সরাসরি দেখা যায়। অথবা, মনিটর চাক্ষুষ আকারে আউটপুট দেখানোর জন্য ব্যবহার করে।

প্রিন্টার:

Printer
প্রিন্টার হলো একটি পেরিফেরাল যন্ত্র। যা মানুষের বোধগম্য গ্রাফ, ছবি, শব্দ, লেখা কাগজে ছাপায়। অথবা, প্রাচীর বা হোয়াইটবোর্ডের মতো পৃষ্ঠে কম্পিউটার স্ক্রীন ডেটা প্রজেক্ট করে।

জিপিএস (GPS):

GPS
জিপিএস (GPS) ডিভাইস জিপিএস কন্ট্রোলার থেকে সমস্ত তথ্য যেমন অবস্থান এবং আবহাওয়ার অবস্থা ইত্যাদির সঠিক আউটপুট প্রকাশ করে।

ব্রেইল রিডার:

Braille reader
এই ডিভাইসগুলো অন্ধ ব্যক্তির জন্য ডিজাইন করা হয়েছে কারণ ব্রেইল রিডার কম্পিউটার থেকে সমস্ত আউটপুট পুনরুদ্ধার করে যা অন্ধদের জন্য পাঠযোগ্য।

প্লটার (Plotter):

Plotter
কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ডিভাইসটি ভেক্টর গ্রাফিক আউটপুট উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। বড় বড় ব্যানার, পেস্টুন, করার জন্য এটি ব্যবহার করে।

  • কম্পিউটারের মেমরি বা স্টোরেজ ডিভাইস (Memory storage) সমূহ:


RAM:

RAM
RAM (Random Access Memory) হল উদ্বায়ী স্টোরেজ মেমোরি যা কম্পিউটার বন্ধ করার সময় সমস্ত ডেটা মুছে যায়।

ক্যাশ মেমোরি:

Cache memory
প্রসেসরের সঙ্গে যুক্ত পৃথক মেমোরিকে ক্যাশ মেমোরি বলা হয়। কম্পিউটারের গতি নির্ভর করে ক্যাশ মেমোরির উপর। এটি অনেকটা র‌্যামের মতোই কাজ করে। প্রসেসর যখন কোনো কাজ করে তখন তথ্য ক্যাশ মেমোরিতে সংরক্ষিত থাকে।

সলিড-স্টেট ড্রাইভ (SSD):

SSD
সলিড-স্টেট ড্রাইভ (SSD) হলো একটি সলিড-স্টেট স্টোরেজ ডিভাইস যা অবিচ্ছিন্নভাবে ডেটা সঞ্চয় করতে ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট অ্যাসেম্বলি ব্যবহার করে, সাধারণত ফ্ল্যাশ মেমরি ব্যবহার করে এবং কম্পিউটার স্টোরেজের শ্রেণিবিন্যাসে সেকেন্ডারি স্টোরেজ হিসাবে কাজ করে।

USB ফ্ল্যাশ ড্রাইভ:

Untitled
USB ফ্ল্যাশ ড্রাইভ সাধারণত সিস্টেম থেকে বিচ্ছিন্নকরণযোগ্য এবং এতে পুনরায় ডাটা লিখা যায়। এর আরেক নাম “পেন ড্রাইভ”। এটি বাহ্যিকভাবে ফ্লপি ডিস্ক বা অপটিক্যাল ডিস্ক থেকে অনেক ছোট।

SD কার্ড:

SD card
নিরাপদ ডিজিটাল (SD) পোর্টেবল ডিভাইসগুলিতে ব্যবহারের জন্য এসডি কার্ড এসোসিয়েশন (SDA) দ্বারা উন্নত একটি অসম্পূর্ণ মেমরি কার্ড ফরম্যাট।

সিডি-রম ডিস্ক (CD-ROM disc):

CD-ROM disk
সিডি-রম ডিস্ক (CD-ROM disc) হলো একটি প্রি-প্রেসড অপটিক্যাল কমপ্যাক্ট ডিস্ক যাতে ডেটা থাকে। কম্পিউটার পড়তে পারে—কিন্তু লিখতে বা মুছতে পারে না। সিডি-রম ডিস্ক (CD-ROM disc) শুধুমাত্র পঠন মেমরি।