চুল সিল্কি করার প্রাকৃতিক উপায়।
সিল্কি, লম্বা, ঘন, মজবুত, চুল পেতে কে না চায়। অনেকের প্রাকৃতিক ভাবে চুল সিল্কি নয়। তারা বিভিন্ন উপায়ে পার্লারে গিয়ে দামী প্রসাধনী ব্যবহার করে চুল সিল্কি করার চেষ্টা করেন। এতে চুলের অনেক ক্ষতিও হয়। তবে প্রাকৃতিক উপাদান চুলের জন্য নিরাপদ। চুলের কোন ক্ষতিও করে না।
চুল সিল্কি করার প্রাকৃতিক উপায়
নিচে প্রাকৃতিক উপায়ে চুল সিল্কি করার উপায় দেওয়া হলো –
অ্যালোভেরা ও লেবুর প্যাক:
অ্যালোভেরার চুলের যত্নে উপকারী। পাশাপাশি লেবুতে রয়েছে ভিটামিন “সি” এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা চুলের বৃদ্ধি ঠিক রেখে চুল সিল্কি এবং সুন্দর করে তোলে।
২ চামচ অ্যালোভেরার জেলের সাথে হাফ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে। এটি প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসাবে কাজ করবে। প্রথমে চুল ভালো করে ধুয়ে নিয়ে অ্যালোভেরা ও লেবুর মিশ্রণ দিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। তারপর ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
ভিটামিন “ই” ক্যাপসুল ও লেবু:
চুল সিল্কি রাখতেও লেবু খুবই কার্যকরী। লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন “সি” এবং সাইট্রিক এসিড যা চুল পড়া কমিয়ে চুলের বৃদ্ধি করে থাকে। আর ভিটামিন ভিটামিন “ই” ক্যাপসুল চুল পড়া কমিয়ে চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রেখে চুল ঘন করতে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া চুলের আগা ফাটা রোধ করে চুল সিল্কি করে তোলে।
২ টেবিল চামচ শ্যাম্পু তার সাথে একটি ভিটামিন “ই” ক্যাপসুল ও হাফ চামচ লেবুর রস দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করতে হবে। এই হেয়ার প্যাকটি গোসলের কিছুক্ষণ আগে ব্যবহার করতে হবে।
ডিম, মধু ও লেবুর প্যাক:
চুল পড়া বন্ধ করে, চুলের শুষ্কতা রুক্ষতা দূর করে চুল মজবুত করতে এই তিনটি উপাদান খুবই কার্যকরী। প্রথমে একটি পাত্রে দুইটি ডিমের সাদা অংশ নিয়ে তার সাথে ২ চামচ মধু, ১ চামচ লেবুর রস এবং ২ চামচ নারকেল তেল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। গোসল করার ১ ঘন্টা আগে চুলে লাগিয়ে নিন। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
টকদই, মধু ও কলার প্যাক:
চুল সিল্কি করতে এই প্যাকটি খুব উপকারী। প্রথমে কলার পেস্ট করে তার মধ্যে টকদই ও দুই চা চামচ মধু দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে চুলে লাগান। এক ঘণ্টা চুলে লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু করে নিন। ভালো ফলাফলের জন্য এক মাস ব্যবহার করুন এই হেয়ার প্যাকটি।
গরম তেল:
চুলের পুষ্টি জোগাতে তেল খুবই উপকারী। চুলের রুক্ষতা দূর করে ও চুল সিল্কি করতে ২ টেবিল চামচ বাদাম তেল, অলিভ অয়েল অথবা জোজোবা অয়েল গরম করে নিতে পারেন।
এই তেলগুলি না থাকলে নারকেল তেলও নেওয়া যাবে। তেল হালকা গরম হলে তা মাথায় চুলের গোড়ায় গোড়ায় ভালো করে ম্যাসাজ করুন। লম্বা চুলেও বেশ টেনে টেনে তেল লাগান। এরপর গরম জলে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে মাথা মুড়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করুন।
প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু করবেন না:
যখন চুল, মাথার ত্বকে নিঃসৃত প্রাকৃতিক তেল থেকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়, তখন চুল শুষ্ক এবং রুক্ষ হয়ে যায়। প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু করলে চুল থেকে তেল দূর হয়ে যায়। সপ্তাহে দুই বা তিনবার শ্যাম্পু করুন।
সবসময় কন্ডিশনার লাগান:
২-৫ মিনিটের জন্য কন্ডিশনার লাগাতে ভুলবেন না। শুধুমাত্র চুলের ডগায় কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। কন্ডিশনার আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
চুলে নিয়মিত তেল দিন:
চুলে শ্যাম্পু করার অন্তত ১ ঘণ্টা আগে চুলে তেল লাগিয়ে রাখুন। চুলে নারকেল তেল, জলপাই তেল, বাদাম তেল ব্যবহার করতে পারেন। তেল দিয়ে মাথার ত্বকে ভালো করে ম্যাসাজ করুন।
চুল কালার করার হেয়ার প্যাক ব্যবহার করবেন না। মাথায় ফুসকুড়ি বা অ্যালার্জির সমস্যা থাকাকালীন সময়ে হেয়ার প্যাক ব্যবহার করবেন না। হেয়ার প্যাক ব্যবহারের পর দ্রুত চুল শুকিয়ে নিবেন।